বরিশাল এক্সপ্রেস ট্রেনের ইতিহাস।
বরিশাল বাংলাদেশের একমাত্র বিভাগ যেখানে কোনো রেলপথ নেই এবং ইতোপূর্বে কখনও ছিল না। কিন্তু মজার ব্যাপার হচ্ছে- সেই ব্রিটিশ আমল থেকেই এদেশে 'বরিশাল এক্সপ্রেস' নামে একটি ট্রেন চলাচল করত! ভাবছেন রেলপথ, রেল স্টেশন ছাড়াই ট্রেন যেত বরিশালে? মোটেও না। তাহলে কোথায় চলত ট্রেনটি?
আসলে নামে বরিশাল এক্সপ্রেস হলেও ট্রেনটি আদৌ বরিশালে যেত না। তবে বরিশালের মানুষের সুবিধা বিবেচনায় এবং কলকাতার সাথে যাতায়াত ব্যবস্থার সুবিধার্থে শিয়ালদহ-যশোর-খুলনা সেকশনে এই ট্রেনটি চলাচল করত। ঠিক সেই কারণেই এর নাম রাখা হয়েছিল বরিশাল এক্সপ্রেস।
বরিশাল এক্সপ্রেস ট্রেনের আপ এবং ডাউন মিলে নম্বর ছিল ৩১ এবং ৩২। সকাল সাড়ে ৮টায় খুলনা থেকে ছেড়ে কলকাতা পৌঁছাত বিকেল ৩:০৫ মিনিটে।
১৮৫৭ সালের সিপাহী আন্দোলন ছিল উপমহাদেশে সর্বপ্রথম জাতীয় মুক্তিসংগ্রাম। অনেকে মনে করেন এই বিদ্রোহের সূত্রপাত ঘটেছিল খুলনার অদূরবর্তী বারাকপুরে। রূপসা এবং ভৈরব বিধৌত খুলনা ১৮৮২ সালে একটি স্বতন্ত্র জেলা হিসেবে স্বীকৃতি পায়। চব্বিশ পরগনার সাতক্ষীরা মহাকুমা এবং যশোরের বাগেরহাট মহাকুমাকে নিয়ে গঠিত হয় খুলনা জেলা। খুলনা বাণিজ্যিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ হলেও ব্রিটিশ শাসনে তেমন একটি গুরুত্ব পায়নি। তবে জেলা হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার পরই এ অঞ্চলের গুরুত্ব বাড়তে থাকে। প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয় রেলপথ নির্মাণের।
বাংলাদেশের প্রাচীনতম নদী বন্দরগুলোর মধ্যে খুলনা ছিল অন্যতম। সমৃদ্ধ কৃষি সম্পদকে কাজে লাগানোর জন্য খুলনায় রেলপথ নির্মাণ যেমন জরুরি হয়ে পড়ে, ঠিক একইভাবে যশোরেও রেলপথ নির্মাণ ছিল অপরিহার্য। উক্ত অঞ্চল পাট শিল্পের জন্য বরাবরই বিখ্যাত ছিল। তাছাড়া রেলপথ নির্মাণের অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল সুন্দরবনের সমৃদ্ধ অর্থনীতিকে কাজে লাগান।
0 Comments