Ads

ভারতে অবস্থিত সিন্ধু সভ্যতার কূপ

 দীপন ভট্টাচার্য লিখেছেন...  সিন্ধু সভ্যতার সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্যগুলির মধ্যে একটি হল জলের ব্যবহার ও তার সংরক্ষণ। আমরা মুখে সেই মহান সভ্যতার উত্তরিধিকারী বললেও এই বিষয়ে তাদের ধারেকাছেও পোঁছতে পারিনি। আজকের দিনের প্রযুক্তি দিয়ে প্রকৃতির জল ভাণ্ডারকে আমরা যথেচ্ছ ভাবে শুধু ব্যবহার করেছি কিন্তু সংরক্ষণ বিষয়টা শিখতে পারিনি। আর তাই উন্নত শহরে আমাদের জলসঙ্কট দেখতে হয়।


সিন্ধু সভ্যতার প্রায় সব শহরই নদীর তীরে অবস্থিত হলেও শহরের মধ্যে অনেক কূপ থাকতো। খাওয়ার ও স্নানের জল অধিবাসীরা মূলত কূপ থেকেই সংগ্রহ করতো। মহেঞ্জোদারোর প্রায় প্রত্যেকটি আবাসিক বাড়িতেই স্নানাগার এবং কূপ ছিল।  খননের সময়ে দেখা গেছে যে অনেক কূপ তখনও ব্যবহারের উপযুক্ত রয়েছে।


শুধু মহেঞ্জোদারোতেই আমরা শতাধিক কূপ পেয়েছি এবং এই কূপগুলি কয়েক শতাব্দী ধরে ব্যবহৃত হয়েছে। খননের এলাকায় পাওয়া কুপের ঘনত্বের হিসাব করে বিখ্যাত প্রত্নতত্ত্ববিদ মাইকেল জ্যানসেন (Michael Jansen) দেখিয়েছেন যে তৎকালীন মহেঞ্জোদারোতে প্রায় ৭০০ খানি কূপ ছিল। 





আবার অন্যদিকে মহেঞ্জোদারোর তুলনায় হরপ্পায় অনেক কম কূপ ছিল, সেখানে মাত্র ৩০ খানির মতো কূপ ছিল। আপনাদের শুনলে অবাক লাগবে যে কালিবঙ্গানের খননের সময়ে প্রাচীন একটি কূপ খননকারী দলের প্রয়োজনীয় জলের যোগান দিয়েছিল।


আজ দেখাব ভারতে অবস্থিত সিন্ধু সভ্যতার কিছু কূপ। প্রথম কূপটি লোথালের। দ্বিতীয়টি রাখিগড়ির ও তৃতীয়টি বানাওয়ালির। চতুর্থ কূপটি কালিবঙ্গানের কিন্তু সেটি উন্মুক্ত নয়, তাই তার উপরের বেড়ের ইটের আভাস শুধু পাওয়া যাচ্ছে। 


একটি বিষয় লক্ষ্য করবেন যে গোলাকার মুখের কূপকে মজবুত করে বাঁধানোর জন্যে তাঁরা কেমন একদিক মোটা ও অন্য দিক সরু (wedged) ইটের ব্যবহার করেছেন। পঞ্চম কূপটি ধোলাভিরার, বিরাট বাঁধানো কূপের উপরের পাথরটিকে লক্ষ্য করবেন, তার প্রান্তে রয়েছে তখনকার দড়ি দিয়ে জল তোলার চিহ্ন। পাথরের গা ঘষে দড়ির দাগ এখনও সেই মানুষদের স্মরণ করছে। না জানি পাঁচ হাজার বছর আগে কতো গল্প, ঝগড়া, মান- অভিমানের সাক্ষী রয়েছে এই কুয়োতলা।

Post a Comment

0 Comments