Ads

জলবায়ু পরিবর্তন কীভাবে সমুদ্রগুলোকে প্রভাবিত করছে?

 একদিকে প্রবালগুলো মৃত্যুর দিকে ধাবিত হতে থাকে এবং অন্যদিকে সমুদ্রজগতের বেশ কিছু প্রাণীও ক্ষতিগ্রস্ত হতে থাকে। প্রাকৃতিক সম্পদ বিশেষজ্ঞ ড. জায়মারা সেরানো বলেন, “প্রবাল প্রাচীরগুলি মৎস্য চাষের জন্য অপরিহার্য। মাছ সহ সমস্ত সামুদ্রিক প্রাণীর প্রায় 25% তাদের জীবনচক্রের কোনো না কোনো সময়ে প্রবাল প্রাচীরের উপর নির্ভর করে”।


ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রা সামুদ্রিক এবং উপকূলীয় বাস্তুতন্ত্রের অপরিবর্তনীয় ক্ষতির ঝুঁকি বাড়িয়ে চলেছে। সমুদ্রের হুঙ্কারে ম্যানগ্রভ বন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আবার আগেই বলেছি যে প্রবাল প্রাচীরও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সেখানে বসবাসরত প্রাণীদের কেউ কেউ তাপমাত্রার পরিবর্তনের সাথে খাপ খাইয়ে নিলেও বাকিরা মেরুতে বা নতুন এলাকায় স্থানান্তরিত হচ্ছে।







বায়ুমণ্ডলীয় কার্বন ডাই অক্সাইডের ক্রমবর্ধমান শোষণের কারণে সমুদ্রের এসিডিফিকেশন ফাইটোপ্ল্যাঙ্কটন, ক্রাস্টেসিয়ান, মোলাস্কাস সহ বিভিন্ন সামুদ্রিক জীবের উপর সরাসরি নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। এসব জীবদের কেউ কেউ খাপ খাওয়াতেও পারছে না, আবার স্থানান্তরও হতে পারছে না। ফলে তাদেরকে বিলুপ্তির দিকে যেতে হচ্ছে।


ইউনেস্কো সর্বশেষ সতর্ক করে যে বিশ্বের অর্ধেকেরও বেশি সামুদ্রিক প্রজাতি ২১০০ সালের মধ্যে বিলুপ্তির দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে যেতে পারে। আজ গড় তাপমাত্রা ১.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধিতে বিশ্বের সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্রের আনুমানিক ৬০% ইতিমধ্যেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আর এই মাত্রা যদি ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছায়, তাহলে ৭০%-৯০% প্রবাল ধ্বংস হয়ে যেতে পারে এবং ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস প্রায় ১০০% সামুদ্রিক প্রবালের ক্ষতির কারণ হতে পারে।


এছাড়াও এক-তৃতীয়াংশেরও বেশি সামুদ্রিক স্তন্যপায়ী প্রাণী, কিলার হোয়েল, ব্লুফিন টুনা এবং পঞ্চাশ ধরনের হাঙর ও হাঙরের আত্মীয় প্রাণীরা বিলুপ্তির পথে হাঁটছে। যদিও এদের বিলুপ্তির পেছনে অবাধ শিকার একটি বড় কারণ, কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনও এক্ষেত্রে অনেকাংশেই দায়ী। কারণ এর ফলে খাদ্যশৃঙ্খলে ক্ষতিকর পরিবর্তন এসেছে এবং সমুদ্রের পরিবেশ দিনকে দিন প্রতিকূল হচ্ছে।

আপনি কি জানেন সামুদ্রিক শৈবালই সবচেয়ে বেশি পরিমাণে অক্সিজেন সরবরাহ করে? আপনি হয়ত জানেন যে বিজ্ঞানীরা বিভিন্ন সামুদ্রিক প্রাণীর উপর গবেষণা করে ক্যান্সারের প্রতিষেধক (যেমনঃ Discodermolide, bryostatins, sarcodictyin ইত্যাদি) উদ্ভাবনের চেষ্টা চালাচ্ছেন। কিন্তু সমুদ্র যেভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, তাতে কি অক্সিজেনের সরবরাহ কমে যেতে পারে না? ক্যান্সারের প্রতিষেধক পাওয়ার সম্ভাবনা নষ্ট হতে পারে না?


এতক্ষণ ধরে যেসব বিষয় শুনলেন, তাতে কী মনে হচ্ছে? নিশ্চয়ই ভাবছেন যে আমরা একটি বিশাল ক্ষতির মুখোমুখি হতে চলেছি। একদিকে আমরা সামুদ্রিক বাস্তুসংস্থানের বারোটা বাজিয়ে ঐসব প্রাণীদের ক্ষতি করছি, অন্যদিকে নিজেদের জন্যও বিপদ ডেকে আনছি। এই মুহূর্তে আমরা কি সচেতনতামূলক কিছু করতে পারি না?


মূল রেফারেন্সঃ How is climate





Post a Comment

0 Comments